নিজস্ব প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলা পরিষদের পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী রহমান ও তার স্বামী স্টোর কিপার হাবিবুর রহমানের দূর্নীতি অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এর একই দিনে পৃথক দুইটি অভিযোগ হওয়ায় এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।গতকাল ২৭ মে শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে বিপক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আরো বেশি সমালোচনায় আসেন বিষয়টি।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২৫ মে বৃহস্পতিবার পৃথক দুইটি অভিযোগ করেন উপজেলার বগডহর গ্রামের মাওলানা মেহেদী হাসান ও দুর্নীতি দমন কমিশন এর কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক রাফী মো.নাজমুস সা’দাৎ।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের বিরুদ্ধে মাওলানা মেহেদীর করা অভিযোগটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব বরাবর দায়ের করে এতে উল্লেখ্য করেন,উপজেলা পরিষদের ২১ ধারা আইন লঙ্ঘন করে নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক তার নিজের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসমাম ট্রের্ডাসের নামে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডারে অংশ নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজ নিয়ে নিচ্ছেন,তার নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে সেলাই মেশিন সরবরাহের কাজ নেওয়া, সরকারী স্কুলের পুরাতন ভবন টেন্ডারের নামে ক্রয় করা। অবৈধভাবে গবাদি পশুর প্রকল্প নেওয়া বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কাজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আদায় করে নেয়।
অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়েছে, নবীনগর উপজেলার গুচ্ছ গ্রামে গ্রীন ভিলেজ প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ করে কোটি টাকা আত্মসাধ করেছেন, ওই প্রকল্পের প্রায় ৬০টি ঘড় বর্তমানে ঝুঁকিপুর্ন অবস্থায় রয়েছে। অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে কৃষি জমির মাটি বিক্রী করা, বাঙ্গরা বাজারে সড়ক ও জনপথের সড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকান উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায়,টি আর কাবিখা,জেলা পরিষদের বহু প্রকল্পের নামে মাত্র কাজ করেই অর্ধ আত্মসাৎ করা,মাদক সেবনকারী ও বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ রাখা, বাশারুক তার নিজ গ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধা দ্বীন ইসলামের উপর ন্যাক্কার জনক হামলা, এক সেনা সদস্যর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ, অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়,তিনি নবীনগর উপজেলার একটি স্বর্নের দোকানে ডাকাতি মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
অভিযোগকারী মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে, আজকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মাননীয় সচিব মহোদয়ের বরাবরে তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। নবীনগরবাসী তার দুর্নীতি ও অনিয়ম থেকে প্রতিকার চাইছে, সে কারণে আমি অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করলে শতভাগ সত্যতা পাওয়া যাবে।
এদিকে সকল অভিযোগ অস্বিকার করে জাকির হোসেন সাদেক বলেন, চেয়ারম্যান হওয়ার আগ থেকেই আমি একজন ঠিকাদার, আমি ব্যবসা করে হালাল উপায়ে অর্থ উপার্জন করে জীবন পরিচালনা করি। বকডহর গ্রামে একটি স্কুলের কাজ করছি, ওই কাজ করতে গেলে মেহেদী হাসান আমার কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে, আমি তাকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে সে আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করে এই অভিযোগ করেছে।
অপর দিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী রহমান ও তার স্টোর কিপার স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যলয়ের উপপরিচালক মোঃ ফজলুল হক মামলা সূত্রে জানান, উপজেলার চিত্রি গ্রামের খুরশেদ আলমের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান এবং তার স্ত্রী নবীনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী রহমান ওরফে মোসাম্মাৎ শিউলী আক্তার একে অপরের সহযোগিতায় মোট ১ কোটি ৪ লাখ ১৪হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন।
দুদকের অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, হাবিবুর রহমান ১৯৮৮ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে স্টোর কিপার পদে এবং ২০১৫ সালে স্টোর অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করে বর্তমানে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকায় কর্মরত আছেন। হাবিবুর রহমানের নামে ৫৫ লাখ ৯১হাজার ৬৬৬ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩২ লাখ ৮০হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করার তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি তার নিজ নামে সর্বমোট ৮৮ লাখ ৭১ হাজার ৬৬৬ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। এছাড়া তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত পারিবারিক ব্যয় ১৫ লাখ ৬হাজার ৫০৮টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৩লাখ ৭৮ হাজার ১৭৪টাকা। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৭-১৮ করবর্ষে আয়কর নথি খোলার সময় পূর্বের বছরগুলোতে চাকুরীর বেতন-ভাতা হতে সঞ্চয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের বেতন-ভাতাসহ মোট আয় পাওয়া যায় ৭৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮ টাকা। অর্থাৎ অনুসন্ধানকালে তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৬ টাকা কম পাওয়া যায়।
অপরদিকে তার স্ত্রী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী রহমান ওরফে মোসাম্মাৎ শিউলী আক্তার এর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য ও আয়-ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিউলী রহমান ২০১৯ সাল থেকে নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ করবর্ষ হতে ২০২১-২২ করবর্ষ পর্যন্ত খাতভিত্তিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী দাখেল করে আসছেন।তিনি তার দুই পুত্রের নিকট থেকে হেবা ঘোষনাপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি ব্যতিত তার নামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পত্তি এবং ৪৯ লাখ ৩২ হাজার ৫১৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন মমে তথ্য পাওয়া যায়। অথ্যাৎ তিনি তার নিজ নামে মোট ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন,তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২৬ লাখ ৫৮হাজার ৯৩৩ টাকা। অর্থাৎ পারিবারিক ব্যয়সহতার মোট সম্পদের পরিমাণ ১কোটি ৯১লাখ ৩৬হাজার ৪৪৭ টাকা। এ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৪-১৫ করবর্ষে আয়কর নথি খোলার পূর্বের বছরগুলোতে বিভিন্ন আয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের ব্যবসা বাড়ী ভাড়া ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত ভাতাসহ তার ১ কোটি ১২লাখ ১১ হাজার ৩৪৯টাকার আয়ের উৎস পাওয়া যায়। অর্থাৎ তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে ৭৯লাখ ২৫হাজার ৯৮টাকার আয়ের উৎস কম পাওয়া যায়। অনুসন্ধানকালে মো. হাবিবুর রহমান এবং তার স্ত্রী শিউলী রহমানের ১কোটি৪লাখ ১৪হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)এর কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ বাদী হয়ে আজ একটি মামলা দায়ের করেছে।
আরো পড়ুন: নবীনগরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের জমি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
মোঃ আলমগীর হোসেন, নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের শাহপুর জয়দুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে টেন্ডার বা বিক্রয়ের অনুমতি না নিয়েই ক্ষমতাবলে একটি জমি বিক্রি করে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ও ওই বিদ্যালয়ের একটি পুকুর ভরাটের জন্য আরো ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক খাইরুল বাশার এর বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চাকুরী সহ বিভিন্ন প্রলোবনে অনেকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছেন শিক্ষক খাইরুল বাশার। এখন ঐ টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন তিনি। একজন প্রধান শিক্ষকের এমন প্রতারণার ঘটনা জানাজানি হলে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক সহ পুরো এলাকাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল বাশার তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, সবগুলো ঘটনাই সত্য, একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে এর দায় আমি কখনো এড়াতে পারিনা। তবে তা অদৃশ্য কারণে আমার করতে হয়েছে।
শাহপুর জয়দুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক বলেন, আমার পূর্বের কমিটি থাকাকালীন স্কুলের একটি জমি সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা বিক্রি করা হয়।তবে সেই টাকা স্কুলের একাউন্টে জমা হয়নি এমনকি কোন রেজুলেশনও নেই। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে একটি শোকজ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে অডিটও চেয়েছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ওই অডিটকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক অফিসার মোকাররম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নয়।খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আরো পড়ুন: নবীনগরে উপনির্বাচনে ইভিএমে ভোট দিলেন শত বছরের বৃদ্ধা
মোঃ আলমগীর হোসেন, প্রতিদিনের পোস্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের বিদ্যাকুট ইউপি’র ১নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে লাঠিতে ভর দিয়ে ভোট কেন্দ্রে এসেছেন ১০০ বছরের এক বৃদ্ধা। ইভিএমে ভোট দিয়ে উৎফুল্ল প্রবীণ এ ভোটার।
আজ ২৫ মে বৃহস্প্রতিবার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহন শুরু হয় ভোট গ্রহণ চলবে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত। দুপুরে বিদ্যাকুট পূর্ব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
প্রবীণ এই বৃদ্ধা প্রতিদিনের পোস্টকে বলেন, আমি টেলিভিশনে ইভিএমে ভোট দেওয়া দেখেছি, এই প্রথম ভোট কেন্দ্রে এসে আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিয়েছি।
প্রিজাইডিং অফিসারে দায়িত্ব থাকা বাকির আহমেদ হামিম বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন চলছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৪০৩ জন। দুপুর ১ টা পর্যন্ত ৫৬% ভোট কাষ্ট হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছে।ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
উল্লেখ্য: গত ইউনিয়ন পরিষদে এই ওয়ার্ডে জয়লাভ করেন আবুল খায়ের মিয়া মেম্বার। দায়িত্ব গ্রহনের কয়েক মাস পর তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়ায় এই ওয়ার্ডে ফের উপ-নির্বাচন হচ্ছে।
নবীনগরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
মোঃ আলমগীর হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা জাকির হোসেন সাদেকের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরের কাজ ভাগিয়ে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আজ ২৫ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের (এলজিইডি) সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। নবীনগর উপজেলার বগডহর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মেহেদী হাসান ওই আবেদন মন্ত্রণালয়ে আজ দুপুরে জমা দেন। মাওলানা মেহেদী হাসান ইসলামী ঐক্যজোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নবীনগর উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহ সভাপতি।
লিখিত ওই আবেদনে অভিযোগ করা হয়, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ২০১১ সালের উপজেলা পরিষদ আইন লংঘণ করে তাঁর নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসমাম ট্রেডার্সের নামে বিভিন্ন সরকারি টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে আসছে। তিনি (সাদেক) ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ বরাদ্দকরণ, গ্রীণ ভিলেজ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ক্ষমতার জোরে ভাগিয়ে নিয়ে সম্পাদন না করেই সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করছেন। যা উপজেলা পরিষদ আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
এছাড়াও লিখিত ওই আবেদনে জাকির হোসেন সাদেক সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত টি,আর ও কাবিখাসহ জেলা পরিষদের অনেক প্রকল্পের টাকা নামমাত্র কাজ করেই আত্মসাত করেন বলে উল্লেখ করা হয়। আরও বলা হয়েছে, সাদেক তাঁর নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইসমাম ট্রেডার্সের নামে প্রাইমারী স্কুলের পুরাতন ভবন ক্রয় এবং গবাদী পশুর প্রকল্পও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজ ভাগিয়ে নেন। এছাড়া স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মোটা অংকের বিভিন্ন কাজ ও সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কাজ ভাগিয়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন। যা ২০১১ সালের উপজেলা পরিষদ আইনের সুস্পষ্ট লংঘণ।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী মাওলানা মেহেদী হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন,’জাকির হোসেন সাদেক নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে গত চারবছর ধরে উপজেলা পরিষদ আইনের ২১ ধারা লংঘণ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন। যা আইনের সুস্পষ্ট লংঘণ। তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে এসব কাজ করতে পারেন না। তাই তার অপসারণ ও প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি।’
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় লাউর ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সাদেক এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার দশ বছর আগ থেকেই ঠিকাদারী ব্যবসা করি। আমি কোন ক্ষমতার অপব্যবহার করে টেন্ডারে অংশ নেই না। যথাযথ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডারে অংশ নিয়ে সারা দেশে কাজ করে কষ্ট করে টাকা কামাচ্ছি। আমার কোন কাজেই অস্বচ্ছতা নেই।’
উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী আপনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে এসব টেন্ডারে অংশ নিতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমিতো নবীনগর উপজেলা পরিষদের কোন কাজে অংশ নেইনা। এলজিইডির বিভিন্ন কাজে বর্তমানে ইটেন্ডারে অংশ নেই। এখন ক্ষমতার অপব্যবহারতো দূরের কথা ইটেন্ডারে অনেক সময় একটি কাজও পাইনা। সবই লস। মূলত সামনে নির্বাচন। তাই আমার ইমেজকে ক্ষুন্ন করতে আমার বিরুদ্বে এসবই ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলতে বারবার কল দিলেও, তিনি কল রিসিভ করেননি।